ব্রিজেট হিলটন
সাফল্য ও সাহায্যের এক সংমিশ্রণ!
ইন্টারনেটে ব্রাউজ করতে করতে এমনিই ঢুকেছিলেন ইউটিউবে। আর সবদিনের মতোই এই ভিডিও সেই ভিডিও দেখতে দেখতে একসময় চোখ আটকে যায় একটা ভিডিওতে। ২০ জন মহিলার জীবনে প্রথমবারের মতো কানে শুনতে পাওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে বানানো ভিডিও। নিজের প্রতিদিনের জীবনের এক মুহূর্তও মিউজিক ছাড়া কল্পনা করতে পারেন না ব্রিজেট। আর সেখানে এই মানুষগুলো তাদের জীবনের একটা বিশাল সময় কানে না শুনে কাটিয়ে দিয়েছে। এই ভিডিও তার বিবেক কাঁপিয়ে দেয়। তখনই সিদ্ধান্ত নেন হেডফোনের ব্যবসা করার। এখন হয়তো ভাবছেন, তার ব্যবসা করায় শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের কী লাভ হবে? এখানেই ব্রিজেট অন্যদের চেয়ে আলাদা। তার কোম্পানির লাভের একাংশ চলে যায় শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের সাহায্যে।
এলএসটিএন, ব্রিজেট হিলটনের হেডফোন কোম্পানি শুরু হয়েছিল মাত্র ১০ হাজার ডলার ব্যাংক লোন নিয়ে। সফল হওয়ার স্বপ্ন অনেকেই দেখে কিন্তু সফলতার ওই দুর্গম সিঁড়ি ভেঙে কয়জন জয়ের পতাকা উড়াতে পারে। ব্রিজেট শুধু নিজের জন্য সফল হতে চাননি। তিনি সফল হতে চেয়েছিলেন আরও হাজারো মানুষকে সাহায্য করার জন্য। আর সেজন্যই বোধহয় ভাগ্যদেবীর সফলতার তীর তার ভাগ্যে এসে লাগতে খুব বেশিদিন লাগেনি। অল্প দিনের মধ্যেই এলএসটিএন গড়ে ওঠে মাল্টিমিলিয়ন ডলারের উপার্জনকারী একটি কোম্পানি হিসেবে।
হেডফোনের ব্যবসা করার পেছনে ব্রিজেটের শেষ অনুপ্রেরণা ইউটিউবের সেই ভিডিও হলেও, তার ভাগ্যের আশপাশে হয়তো এই ব্যবসাই লেখা ছিল। কারণ লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাসকারী ব্রিজেটের জীবনে ৮ বছরের একটা বিশাল সময় কেটেছে ইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপে সঙ্গীতজ্ঞ জ্যাক জনসন, টেইলর সুইফট এবং কেনি ওয়েস্ট এমন মানুষদের সাথে। সুতরাং সুরের মাধ্যমে জীবন পরিবর্তন করে দেওয়ার মতো প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে ব্যবসা করতে নামা তার পক্ষে খুবই স্বাভাবিক। পুরো পৃথিবীতে শ্রবণ সমস্যার অধিকারী মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন। এদের অধিকাংশই কিন্তু শুধুমাত্র হিয়ারইং এইড পেলেই ঠিকমতো শুনতে পাবেন। ব্রিজেটের কোম্পানি স্টারকি হিয়ারিং ফাউন্ডেশনের সহায়তায় প্রায় ২০,০০০ মানুষকে হিয়ারিং এইড সরবরাহ করেছে। এখন পর্যন্ত তারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন আমেরিকা, পেরু, উগান্ডা, কেনিয়া, চায়না এবং শ্রীলংকাতে। সাফল্য এবং সাহায্যের সংমিশ্রণ যখন একসাথে হয় তখন এগিয়ে যাওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। ব্রিজেট হিলটনের জন্য শুভকামনা।
No comments:
Post a Comment