Sunday, June 7, 2015

পটকা বানায় শিশু রায়মন

পটকা বানায় শিশু রায়মন

রায়মন পটকা বানায়। বানানোর সময় পটকা ফুটে গিয়ে যে কোন বিপদ ঘটে যেতে পারে। কিন্তু সেটা ভাবলে পেট চলে না তাই ঝুঁকি নিয়েই কাজ করে যেতে হয় ওকে।  
রায়মনের বয়স /  বছরের বেশি  মনে হয় না। নিজের বয়স বলতে পারে না। খুব ভোরে উঠতে হয় ওকে। সকালে কোনদিন  খাবার জোটে কোন দিন জোটে না। খাবার জুটলেও তা ভর্তা-ভাত বা পেঁয়াজ-মরিচ দিয়ে মাখা ভাত
ওরা ঢাকার লালবাগের কাছে নদীর চরে থাকে। চরের নাম জানে না। একটা ঘরের মধেই মা-বাবা, এক ভাই আর এক বোন নিয়ে পাঁচ জনের  সংসার ওদের। ভাইবোনের ভেতর বড়। ছোটবোনের বয়স / মাস হবে। ছোট ভাইয়ের বয়স বলতে পারে না। ছোট ভাই ওয়ানে পড়ে কিন্তু ওর পড়তে ভাল লাগে না
দুই ক্লাস পর্যন্ত পইড়া আর ভাল লাগেনি। ইশকুলে যাইতে আমার ভাল লাগে না। পড়ায় মন বসে না।”  
পড়া ছেড়ে দেয়ার পর থেকে রায়মন পটকা বানানোর কাজ করে। সকাল সাতটার দিকে কাজে যায়। রোজ এক থেকে দেড় দু হাজার পটকা বানায়
কাজ করতে গিয়ে ওর দুহাতেই চর্ম রোগ হয়েছে। ব্যথা নাই কিন্তু চুলকায় মাঝে মধ্যে।বাপে  ডাক্তারের কাছে নিছিল। ওষুধও দিছিল। কিন্তু সারে না তাই আর ওষুধ খাই না।
খুব সহজেই বলে, “পটকা  বানাতে আমার ভালই লাগে।ওর মত আরও ১২/১৩ জন শিশু ওখানে একই কাজ করে।
বিকালে ছুটি পায় কিন্তু মাঝেমধ্যে রাতেও কাজ করে। কাজ বাবদ রোজ ৫০ টাকা পায়। সব টাকা মায়ের হাতে তুলে দেয়
দুপুরে কাজের জায়গাতেই খাবার পায়। ভাত নয়। রুটি-কলা বা রুটি-ভাজি এসব
ওর লাটিম নিয়ে খেলতে বেশি ভাল লাগে
বাপ রাইতে দেরি কইরা আসে। আমি খাইয়া ঘুমাই পড়ি। বাপে আগে রিকশা চালাইত, অহন রাজমিস্ত্রির কাজ করে।” 
বুধবার রায়মনের ছুটির দিন।সেদিন মায়ের কাছে থাকে আর খেলে বেড়ায়। তবে ওর জীবনেও আনন্দের ঘটনা ঘটে।আইজকা মা পিঠা বানাইছিল।সকালে পিঠা খাইছি,” বলে ও। "ইলিশ মাছ আমার প্রিয়। মুরগির  মাংসের থিকা ইলিশ মাছই ভাল লাগে আমার।"
শীতকাল ওর পছন্দ নয়। ওদের কম্বল আছে  দুইটা। একটা ছেঁড়া, একটা ভাল।   
বড় হয়ে কি করবে জানে না। পটকা বানাতেই  ভাল  লাগে ওর
“ভবিষ্যতে আর  কি করুম? পটকাই  বানামু।”  

পটকা বানায় শিশু রায়মন

1 / 1

 3
 0
 0      Print Friendly and PDF
- See more at: http://hello.bdnews24.com/kothaykothay/article8012.bdnews#sthash.dslInf6n.dpuf

No comments:

Post a Comment